ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা দেয়নি মন্ত্রণালয়

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৮:৫২:০৯
বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা দেয়নি মন্ত্রণালয়

কিছু অনলাইনে স্কুল খোলার নির্দেশনা জারি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হাসান মঙ্গলবার বিকেলে সমকালকে বলেন, 'প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার কোনো নির্দেশনা কাউকে দেওয়া হয়নি। আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছি, স্কুল খোলার জন্য প্রস্তুতির যে নির্দেশিকার অনুমোদন দিয়েছি- তা বিদ্যালয় পর্যায়ে সরবরাহ করে সবাইকে অবহিত করতে। একইসঙ্গে সচেতনতা তৈরির জন্য পোস্টার ও লিফলেটের ব্যবস্থা করতে বলেছি।'

তিনি বলেন, 'যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর শর্ত প্রতিপালন করে বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার জন্য একটি নির্দেশিকা (স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান) তৈর করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, আগের মত আর প্রতিদিন প্রতিটি বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হবে না। রুটিন সংকুচিত করা হবে। স্কুলে ঢুকেই সব শিশুকে হাত ধুতে হবে। স্কুল মাঠে খেলাধুলা সীমিত করা হবে। এ পরিকল্পনায় বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম চালানোর জন্য মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা অফিসার, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের জন্য নানা নির্দেশাবলীও রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, শিশুস্বাস্থ্য ও করোনা প্রতিরোধমূলক নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্কুল খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্ক পরা, হাত পরিষ্কার, থার্মোমিটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। আগের মতো প্রতিদিন সব বিষয়ের ক্লাস হবে না। কবে কোন বিষয়ের ক্লাস হবে তা শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সদস্যরা বসে নির্ধারণ করবেন। এছাড়া প্রতিদিন কীভাবে ক্লাস পরিচালনা হবে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে আলাদাভাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে ৫০টির বেশি নির্দেশনা থাকছে এই পরিকল্পনায়। করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধিগুলো অনুসরণ করে এসব নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন সমকালকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালনা করতে তারা এই পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় পরিচালনায় দিকনিদের্শনা তৈরি করা হয়েছে। সবাইকে সেসব বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগের মতো আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হবে হবে না। বিদ্যালয় খোলার ১৫ দিন আগে থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রস্তুতি শুরু করা হবে। ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের করণীয় ও প্রতিদিন কীভাবে ক্লাস পরিচালনা করা হবে সেসব বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে।

এ পরিকল্পনায় দেখা গেছে, বিদ্যালয় খোলার সরকারি নির্দেশনার পর ন্যূনতম ১৫ দিন আগে শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ক্লাস উপযোগী করে বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন করে তুলতে হবে। বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলের গেটে বা প্রবেশের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করবে। থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করানো হবে।

আর স্কুল রি-ওপেনিংয়ের পাঠ্যক্রম পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আগের মতো ক্লাসে এক বেঞ্চে তিন বা চারজন শিক্ষার্থী বসতে পারবে না। দূরত্ব বজায় রেখে পাঠদান করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বেঞ্চে দুজন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আগের মতো আর সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে না। একটি স্তরে সপ্তাহে দুই বা তিন দিন অথবা প্রতিদিন দুই-তিনটি ক্লাস নেওয়া হবে। তবে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণিকে অধিক গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যক্রম নির্বাচন করে কোন দিন কোন বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হবে তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও এসএমসির সদস্যদের নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

বিদ্যালয় চলাকালীন করণীয় হিসেবে এ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে আসতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক মুখে মাস্ক পরে আসতে হবে। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে উপচে পড়া, ভিড় করে খেলাধুলা, আড্ডা-গল্প করতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব রেখে হাঁটা-চলা করতে হবে। নোটিশ বোর্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যোগাযোগ নম্বর লিখে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় তাকে চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে