ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১

জানলে অবাক হবেন যেসব অধিকারে বদলেছে সৌদি নারীদের জীবন

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ আগস্ট ২৮ ২১:১৫:৩০
জানলে অবাক হবেন যেসব অধিকারে বদলেছে সৌদি নারীদের জীবন

গত জুনে ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সিংহাসনের উত্তরসূরি করেন সৌদি বাদশাহ সালমান। এরপর থেকে বদলের হাওয়া বইতে শুরু করেছে ‘রক্ষণশীল’ দেশ বলে পরিচিত সৌদি আরবে।

দেশটি অর্থনৈতিক সংস্কারের নামে তেলভিত্তিক অর্থনীতির ওপর নির্ভরতা কমানো, পর্যটন ও শিল্পায়নে গুরুত্ব দেওয়া, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি আর নারীদের অধিকারের বিষয়ে ধাপে ধাপে অনেকটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যার মূল কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে তরুণ ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে। বাবা বাদশাহ সালমান সিংহাসনে থাকলেও কার্যত অনেকে ক্ষেত্রেই মূল ভূমিকা পালন করছেন এই যুবরাজ।

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কর্মসূচি ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বর্তমানে সৌদি নারীরা বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রে সৌদি নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে নারীর সংখ্যা ২২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মোট জনশক্তির এক-তৃতীয়াংশ করতে চায় দেশটি।

সৌদির রাজধানী রিয়াদে এখন বিপুল সংখ্যক ছাত্রীকে স্কুলে যেতে দেখা যায়, ৬৫ বছর আগে যা ভাবাই যেত না। সৌদির মেয়েদের প্রথম স্কুল দার আল হানান। আর রিয়াদ কলেজ অব এডুকেশন সৌদি নারীদের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৭০ সালে চালু হয়।

দেশটির নারীদের পরিচয়পত্র পাওয়ার অগ্রাধিকার দেয়া হয় একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এসে। সৌদি আরবে নারীদের পরিচয়পত্র নিতে হলে আগে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন হতো। ২০০১ সালে সৌদি নারীরা পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই পরিচয়পত্র নেয়ার সুযোগ পান।

২০০৫ সালে সৌদি আরবে নারীদের জোরপূর্বক বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় সরকারে প্রথম নারী মন্ত্রী নিয়োগ করেন বাদশাহ আব্দুল্লাহ। নূরা আল কায়েজ নারী বিষয়ক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সে বছর সরকারে যোগ দেন। ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে অংশ নেন সৌদি নারীরা।

তাদের মধ্যে সারাহ আত্তার নারীদের ৮০০ মিটার দৌড়ে লন্ডন অলিম্পিকের ট্র্যাকে নেমেছিলেন হিজাব পরে। আসর শুরুর আগে নারীদের অংশগ্রহণ করতে না দিলে সৌদি আরবকে অলিম্পিক থেকে বাদ দেয়ার কথা জানিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। ওই বছর সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি পান সৌদি নারীরা। তবে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায়, ইসলামী রীতিতে পুরো শরীর ঢেকে এবং কোনো পুরুষ আত্মীয়ের উপস্থিতিতে তা চালানোর অনুমতি দেয়া হয়।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবের রক্ষণশীল কাউন্সিল ‘শুরা’য় প্রথমবারের মতো ৩০ জন নারীকে শপথ বাক্য পাঠ করান বাদশাহ আব্দুল্লাহ।২০১৫ সালে সৌদি আরবের পৌরসভা নির্বাচনে নারীরা প্রথমবারের মতো ভোট দেয়ার এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ড নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছিল ১৮৯৩ সালে, জার্মানিতে তা চালু হয় ১৯১৯ সালে। ২০১৫ সালে সৌদি আরবের ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০ জন নারী।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব দেশটির স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারপারসন হিসেবে সারাহ আল সুহাইমির নাম ঘোষণা করে আরেক ইতিহাস সৃষ্টি করে।এদিকে ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে। ২০১৮ সালের জুন মাসে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে। ফলে গাড়ি চালাতে সৌদি নারীদের আর কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবে না। এছাড়া গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাচ্ছেন তারা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে