ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার জিতলেন ঠেলা গাড়ী চালকের মেয়ে রানি

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ আগস্ট ২৩ ১৮:১০:১৩
ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার জিতলেন ঠেলা গাড়ী চালকের মেয়ে রানি

এতো বড় অর্জন এই নারী ক্রীড়াবিদকে মোকাবিলা করতে হয়েছে অনেক বাঁধা। বাবার দারিদ্র্য, আর সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, সবকিছুকে পেরিয়ে তিনিই এখন ভারতের রত্ন। সম্প্রতি, ভারতীয় গণমাধ্যম দৈনিক আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের লড়াই সংগ্রামের গল্প শুনিয়েছেন রানি রামপাল।

বেশ গরীব ঘর থেকে উঠে আসতে হয়েছে ভারতীয় এই নারী অ্যাথলেটকে। বাবা ছিলেন একজন ঠেলাগাড়ি চালক। আর পরিবারে ছিলেন তিন ভাই-বোন। তাই বেঁচে থাকাটা খুব একটা সহজ ছিল না।এমন এক পরিবার থেকে উঠে এসে ভারতের মতো দেশের জাতীয় হকি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রানি রামপাল। যার বেঁচে থাকাই ছিল দুরূহ, সেই রানি কি-না জিতলেন ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মাননা ‘রাজীব গান্ধী খেলরত্ন’ পুরস্কার।

লড়াই সংগ্রামের গল্প শুনিয়ে রানি রামপাল বলেন, ‘চলার পথটা সহজ ছিল না, হরিয়ানায় দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে প্রবল সংগ্রামের মাধ্যমে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হকিই হয়ে উঠেছিল অস্ত্র। এটা স্রেফ খেলা ছিল না, ছিল তার বাঁচার মাধ্যম। নিজের জীবনের গল্প জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘খুব কঠিন দিন গিয়েছে। আমি খুব গরিব ঘর থেকে উঠে এসেছি। বাবা ছিলেন ঠেলাগাড়ির চালক। বেঁচে থাকাটাই ছিল ভেরি ডিফিকাল্ট। তিন ভাই-বোনের সংসার ছিল। ভয়ানক সব দিন দেখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে হকি ছিল আমার প্যাশন। হকি খেলতে ভালবাসতাম। সেই কারণেই হকি খেলায় মন দিই। স্বপ্ন দেখতাম যে, একদিন দেশের হয়ে খেলছি। এটাও মনে ছিল যে, দেশের হয়ে খেলতে পারলে যদি পরিবারকে বাঁচাতে পারি। ধীরে ধীরে এটাই জীবন হয়ে উঠলো। খুব খাটতাম। জাতীয় দলে আসার পর চাকরি পেলাম। ইট ওয়াজ রিয়েলি স্ট্রাগলিং পিরিয়ড, নট ইজি। জীবন আমাকে একেবারেই সাজিয়ে দেয়নি কিছু। তবে এটাও ভাবি যে, আমি নিশ্চয়ই আশীর্বাদধন্যা। আমি ব্লেসড যে হকি খেলতে পারি। উপরওয়ালা আমাকে সেই শক্তি দিয়েছেন। সেই কারণেই সব হার্ডল, বাধা-বিপত্তি টপকে চলতে পেরেছি।’

অজস্র প্রতিকূলতা টপকে, লড়তে লড়তে এগোতে হয়েছে। শুরুর দিনগুলো থেকে খেলরত্ন সম্মান। এই সফর কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমার কাছে বিশাল সম্মান। মহিলা হকি খেলোয়াড় হিসেবে এই ঐতিহ্যশালী খেলরত্ন একটা মস্ত বড় স্বীকৃতিও। এর আগে কোনও মহিলা হকি খেলোয়াড় এই সম্মান পাননি। আমিই প্রথম। সেটাও গর্বের জায়গা। আমি এই সম্মান উৎসর্গ করছি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যারা লড়ছেন, সেই সমস্ত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। এবং অবশ্যই এই সম্মান আমাদের মহিলা হকি দলের প্রত্যেকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইছি।’

খেলরত্ন সম্মান উৎসর্গ করলেন করোনার বিরুদ্ধে যোদ্ধাদের। লকডাউনে সতীর্থদের সঙ্গে অর্থসংগ্রহে নেমেছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ আমি বড় হয়েছি অনেক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে। আমার মনে হয়, ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমাদের একটা সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। শুধু আমি একা নই, সবাই একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। প্রত্যেকেই নানা সমস্যার সামনে পড়েছি। সেই কারণেই যাদের দরকার, তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। এখানে আবার ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা ফের বলতেই হচ্ছে। তাঁরা নিজের প্রাণ হাতে নিয়ে বাকিদের নিরাপত্তার জন্য লড়ে চলেছেন কোভিডের বিরুদ্ধে। তাদেরকে স্যালুট।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ