দেশে থাকা প্রবাসীদের জন্য আসতে যাচ্ছে বিশাল সুখবর

অপর্যাপ্ত উপার্জন, অর্থনৈতিক সমস্যা, সামাজিক সেবার অভাব এবং সীমিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ: সার্ভে অন ড্রাইভারস অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড মাইগ্রেন্টস প্রোফাইল’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বুধবার (১৯ আগস্ট) একটি অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ করে সংস্থাটি।
আইওএম জানায়, ২০১৯ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে, সর্বমোট ১১ হাজার ৪১৫ জন সম্ভাব্য অভিবাসীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। ওই সম্ভাব্য অভিবাসীরা ২০২০-এর জুনের মধ্যে অভিবাসনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। অভিবাসনের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন কিনা তার ওপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য অভিবাসীদের নিয়মিত এবং অনিয়মিত এই দুই খাতে ভাগ করা হয়।
বাংলাদেশে এই প্রথম ৬৪ জেলার ওপর এ ধরনের গবেষণা পরিচালিত হলো বলেও জানায় সংস্থাটি। এর আগে বাংলাদেশে অভিবাসনের চালিকাশক্তির ওপর পরিচালিত গবেষণাগুলো ছিল পরিসর এবং মাত্রার দিক দিয়ে নির্দিষ্ট ও সীমিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণার অধিকাংশ উত্তরদাতা পুরুষ (৮৯ শতাংশ) এবং অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ২৭। ৬৪ শতাংশের বয়স ২০ এর কোটায়। অংশগ্রহণকারীদের প্রায় অর্ধেকই বিবাহিত। অধিকাংশ উত্তরদাতা কর্মক্ষম এবং শিক্ষার কিছু স্তর পার করেছেন।
“উত্তরদাতাদের শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তরের কথা বিবেচনা করলে, ৪১ শতাংশ মাধ্যমিক স্তর সম্পন্ন করেছেন, ২৭ শতাংশ উচ্চবিদ্যালয় স্তর এবং ২৬ শতাংশ প্রাথমিক স্তর সম্পন্ন করেছেন। উত্তরদাতাদের মধ্যে ৩ শতাংশ শিক্ষার কোনও স্তরেই প্রবেশ করেননি।”
জরিপে অংশ নেওয়া ৪০ শতাংশ সম্ভাব্য অভিবাসী অভিবাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কর্মহীন ছিলেন। ৯০ শতাংশ উত্তরদাতা জানান, তাদের ব্যক্তিগত কোনও উপার্জন নেই বা থাকলেও তা অপর্যাপ্ত।
আইওএম জানায়, অভিবাসীরা বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলো ছেড়ে উত্তরের দেশগুলোতে অভিবাসন করে−এই বহুল প্রচলিত ধারণাকেও তুলে ধরে প্রতিবেদনটি। উপাত্ত থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই চিত্র ভিন্ন। বরং, বাংলাদেশে অভিবাসন মূলত দক্ষিণ থেকে দক্ষিণে ঘটে। অধিকাংশ অভিবাসী মধ্যপ্রাচ্য কিংবা এশিয়ার অন্যান্য দেশে অভিবাসন করে থাকেন। মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অধিকাংশ উত্তরদাতা জানান, তারা মধ্যপ্রাচ্যে যেতে চান। গন্তব্য দেশ হিসেবে সৌদি আরব সবচেয়ে জনপ্রিয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮৫ শতাংশ সম্ভাব্য অভিবাসী তাদের অভিবাসনের জন্য অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে নিয়মিত এবং অনিয়মিত সম্ভাব্য অভিবাসীরা প্রায় একই পরিমাণ অর্থ দিয়েছেন। নিয়মিত সম্ভাব্য অভিবাসীরা গড়ে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫১ টাকা (২,৮৭১ মার্কিন ডলার) দিয়েছেন, যেখানে অনিয়মিত সম্ভাব্য অভিবাসীরা গড়ে দিয়েছেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৮৮ টাকা (২,৭০৫ মার্কিন ডলার)। অভিবাসনের জন্য অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সর্বোচ্চ অর্থের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ টাকা (১৮,৮৫৭ মার্কিন ডলার)।
আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম উৎস দেশ। ২০১৯ পর্যন্ত ৭৮ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে অবস্থান করেছেন। প্রতি বছর এদেশে ২২ লাখেরও বেশি তরুণ জনগোষ্ঠী শ্রমশক্তিতে যুক্ত হন। কিন্তু স্থানীয় শ্রমবাজার এই কর্মসংস্থানপ্রার্থীদের জায়গা দিতে সক্ষম নয়।
সম্ভাব্য অভিবাসীদের জিজ্ঞেস করা হয় কী কী পরিবর্তন করা হলে তারা দেশে থাকবেন। প্রায় সবাই (৯৯ শতাংশ) শতাংশ উত্তর দেন, উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলে তারা বাংলাদেশেই থাকবেন। উত্তরদাতাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘দেশে আমি যা উপার্জন করি তা দিয়ে ভালোমতো জীবন চালাতে পারি না। বিদেশে গিয়ে অনেকেই ভালো করছে, তাই আমিও বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গবেষণায় অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের ৩৮ শতাংশ উল্লেখ করেন, আইনের উন্নতি হলে তারা দেশে থাকবেন। ৩৬ শতাংশ উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ২৯ শতাংশ আরও সুলভ স্বাস্থ্যসেবার কথা উল্লেখ করেছেন দেশে থাকার জন্য। প্রায় অর্ধেক অংশগ্রহণকারী জানান, তারা দেশে থাকবেন যদি তাদের আরও বেশি পড়াশোনার ক্ষেত্রে সহায়তা করা হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, ‘শ্রম অভিবাসন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই খাতকে আরও ভালোমতো বুঝতে কাজের সন্ধানে বিদেশ গমনকারীদের ডাটাবেজ তৈরি প্রয়োজন। যে ডাটাবেজে তাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। ভবিষ্যতে উন্নত তথ্যনির্ভর অভিবাসন নিশ্চিতেও কাজ করবে এই ডাটাবেজ। এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনের কারণগুলোর বিস্তারিত তুলে এনেছে। উন্নত নীতিমালা ও অনুশীলন তৈরিতে প্রতিবেদনটি আমাদের সহায়তা করবে।’
আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো আমরা দেশব্যাপী সম্ভাব্য অভিবাসীদের ওপর জরিপ পরিচালনা করেছি। এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের আর্থসামাজিক চালিকাশক্তিগুলো নিয়ে কাজ করতে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি শিক্ষা ও দক্ষতায় বিনিয়োগের গুরুত্ব সম্পর্কে উচ্চস্তরের আলোচনা ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে প্রতিবেদনটি। আমরা যখন অভিবাসী কর্মীদের ওপর বিনিয়োগ করি তখন তা তাদের জনগোষ্ঠীর ওপরও বিনিয়োগ হয়।’
প্রবাসী - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আ.লীগকে ৭৫% মানুষ সমর্থন করছে জাতিসংঘের জরিপ, জানা গেল সত্যতা
- নির্বাচনী আসন ভাগাভাগি করলো এনসিপির প্রার্থীরা
- আছিয়ার শেষ স্বীকারোক্তি: আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- শেয়ারবাজারে কারসাজি: বিএসইসি'র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে সামনে এলো গুরুত্বপূর্ণ নাম
- মেহেদী হাসান মিরাজের নতুন নাম দিল আইসিসি
- মাগুরার আছিয়ার বোনের বক্তব্য: শোনেন আসল সত্যিটা (ভিডিওসহ)
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক, জরুরি পদক্ষেপ নিলেন ডিএসই চেয়ারম্যান
- স্বাস্থ্য খাতে বড় সংস্কার: ২৬ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত
- শান্ত বাদ, তবে নতুন অধিনায়ক মিরাজ নয়
- দুই আসন থেকে নির্বাচন করবেন নাহিদ ইসলাম
- দুই কোটি নয় মুস্তাফিজকে দলে নিতে কলকাতাকে গুনতে হবে ৬.৫ কোটি রুপি
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (১৩ মার্চ ২০২৫)
- আজ সামান্য বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার