ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

প্রবাসীদের জন্য চরম দুঃসংবাদঃ মেয়াদ শেষ হচ্ছে সাড়ে ৮২ হাজার শ্রমিকের ভিসার

প্রবাসী ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ জুলাই ১৮ ১৫:১৮:০৯
প্রবাসীদের জন্য চরম দুঃসংবাদঃ মেয়াদ শেষ হচ্ছে সাড়ে ৮২ হাজার শ্রমিকের ভিসার

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ মহামারীসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে যেসব শ্রমিক বিদেশ যাত্রার প্রক্রিয়ায় ছিলেন, শঙ্কাপূর্ণ অনিশ্চয়তার মেঘ ঘিরে ধরেছে তাদের।

এরই মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। শেষ হওয়ার পথে রয়েছে আরো সাড়ে ৮২ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ।জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) নিবন্ধিত ১ হাজার ৬০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ৩২০টির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মহামারী শুরুর সময় ইস্যুকৃত বা ইস্যু হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা ভিসার সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার ৪০৫টি।

এসব ভিসাধারী শ্রমিকের অনেকেই সৌদি আরব, কাতার, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন।যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তাদের অনেকেই উড়োজাহাজের টিকিটও কিনে রেখেছিলেন।আবার কারো কারো ভিসা হয়েছিল, কিন্তু টিকিট কাটা হয়নি। ভিসা ইস্যুর নানা প্রক্রিয়ায় অপেক্ষমাণ ছিলেন আরো অনেকেই। তাদের সবারই এখন যাত্রা অনিশ্চিত।

বায়রার তথ্য বলছে, এরই মধ্যে ২ হাজার ১৮৬টি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে পড়েছে। আর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলেও মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ৮২ হাজার ৫৮৯ শ্রমিকের ভিসা। ভিসা স্ট্যাম্পের জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন ৩০ হাজার ৪২২ জন। ভিসা স্ট্যাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে ১৯ হাজার ১৯৮ জনের, জনশক্তি ছাড়পত্র পেয়েছে ২২ হাজার ৯৮৭, ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৪ ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় ছিলেন ৬ হাজার ৯০৪ জন।

এ বিষয়ে বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান প্রবাসমেইল-কে বলেন, এখন পর্যন্ত বায়রার সবগুলো সদস্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে আরো প্রায় ৮২ হাজার। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এসব কর্মীর ভিসা প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করতে এজেন্সিগুলোর প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ইস্যুকৃত এসব ভিসা বাতিল করবে, নাকি পুনরায় একই নামে ভিসা ইস্যু করে কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ করে দেবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ফলে যারা বিদেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছিলেন, তারা যেমন আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন, তেমনি অর্থ ফেরতের চাপে রয়েছে এজেন্সিগুলোও। যদিও এরই মধ্যে বিদেশগামী কর্মীদের নিবন্ধন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, মেডিকেল ও টিকিট ক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনা বাবদ অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে এজেন্সিগুলো। এ অবস্থায় ভিসা বাতিল হলে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের পাশাপাশি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে যাবে।

শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছি। আসন্ন ঈদের পর আবারো কর্মী পাঠানো যায় কিনা, সে চেষ্টাও করা হচ্ছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে টিকে থাকতে হলে দক্ষ শ্রমিক রফতানিতে জোর দিতে হবে। বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে প্রচুর শ্রমিক প্রয়োজন হবে। আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

প্রসঙ্গত, দেশে প্রবাসী আয় আহরণের শীর্ষ ১৫টি উৎস দেশের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ রয়েছে সাতটি। এর মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। এ তালিকায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন ও জর্ডান।

এদিকে এভাবে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ছুটি নিয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের বড় একটি অংশ এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছে। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সরকার নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেয়া ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দিয়েছে। তার পরও স্বস্তিতে নেই প্রবাসীরা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে