ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

যে ৫ বোলার ক্রিকেট ইতিহাসে জীবনে কোন নো বল করেননি

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ জুলাই ১৪ ১৭:৩৬:১৮
যে ৫ বোলার ক্রিকেট ইতিহাসে জীবনে কোন নো বল করেননি

ফিল্ডিংয়ে বাধা দেওয়া আর বলকে হাতে ধরা ছাড়াও ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ, ক্যাচ বা বোল্ড আউট হয় না। বেশিরভাগ সময় জোরে বোলারই নো বল করেন, স্পিনাররা খুব কমই নো বল করে থাকেন। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যখন কোনো বোলারের নো বল করার কারণেই তার দলকে হারতে হয়েছে। বর্তমান সময় যদি আপনি এমন কোনো বোলারের সন্ধান করতে চান যিনি নো বল করেননি তো এটা ভীষণই মুশকিল একটা কাজ হবে।

কিন্তু ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন পাঁচ বিশিষ্ট বোলারও ছিলেন যারা নিজেদের পুরো ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কখনও নো বল করেননি। এই পাঁচজন বোলারের মধ্যে চারজন জোরে বোলার আর একজন স্পিন বোলার। তো আসুন জেনে নেওয়া যাক।

কপিল দেব-ঃ হরিয়ানা হ্যারিকেন নামে জনপ্রিয় ভারতের অলরাউন্ডার কপিল দেব নিখাঞ্জ নিজের পুরো ক্রিকেটিং কেরিয়ারে কখনও নো বল করেননি। কপিলদেবকে আজও ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে মহান অলরাউন্ডার হিসেবে মনে করা হয়। ভারতীয় ক্রিকেটে একজন অলরাউন্ডার হিসেবে কপিলদেব যে জায়গাটা হাসিল করেছেন, তা এখনও আর কোনো অলরাউন্ডার চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি। ১৯৭৮এ টেস্টে অভিষেক করা কপিলদেব ১৯৮৩তে ভারতকে নিজের অধিনায়কত্বে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। কপিল দেবের ওয়ানদেতে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৩৮ বলে খেলা ১৭৫ রানের ইনিংস ক্রিকেটের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে নথিভুক্ত রয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫০০০ এর বেশি রান আর ৪০০র বেশি উইকেট নেওয়া বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার তিনি। কপিল দেব ১৬ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে একবারও নো বল করেননি।

ইমরান খান-ঃ পাকিস্তান ক্রিকেটে যখন ব্যক্তিগত প্রদর্শনকে দলের জয় থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হত, সেই সময় দলে ইমরান খানের আসা একটা বিপ্লবের মতো ছিল। ইমরান খান ১৯৮২তে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হন আর ১৯৮৭তে ভারতকে ভারতে হারানো প্রথম অধিনায়ক ছিলেন। ইমরান খানের অধিনায়কত্বেই ১৯৯২তে পাকিস্তান নিজেদের একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেতাব জিতেছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচে ইমরান খানের ব্যাট থেকে ৭২ রান আসে আর বোলিংয়ে তিনি ৪৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তানের হয়ে ৮৮টি টেস্ট ম্যাচে ৩৮০৭ রান করেছেন এবং ৩৬২টি উইকেট নেন। তিনি ১৭৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ৩৭০৯ রান করেন আর ১৮২টি উইকেট নেন। একজন অসাধারণ অধিনায়ক হিসেবে ইমরান খানকে স্মরণ করা হয়, যিনি নিজের পুরো ক্রিকেট ক্যারিয়ারে একবারও নো বল করেননি।

ইয়ান বোথাম-ঃ ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক ইয়ান বোথামকে বিশ্ব ক্রিকেটের মহানতম অলরাউন্ডারদের মধ্যে একজন হিসেবে গুনতি করা হয়। টেস্ট আর ওয়ানডে দুটিতেই ইয়ান বোথাম ব্যাট আর ব্যাটে ইংল্যান্ডের একজন ম্যাচ উইনার খেলোয়াড় ছিলেন। ১৫ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেট কেরিয়ারে বোথাম ১০২টি ম্যাচে ৩৮৩টি উইকেট নিয়েছেন, সেই সঙ্গে ব্যাট হাতেও ৫০০০ রান করেছেন। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের হয়ে ১১৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ২১১৩ রান করেছেন আর সেই সঙ্গে ১৪৫টি উইকেটও নিয়েছেন। এই মহান খেলোয়াড় বিশ্ব ক্রিকেটকে দেখিয়েছেন যে অনুশাসন কী হয়। তিনি নিজের ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কখনও ৬ বলের বেশি ওভার করেননি।

ডেনিস লিলি-ঃ অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন কিংবদন্তী বোলারকে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে মহান জোরে বোলারদের মধ্যে একজন মনে করা হয়। ডেনিস লিলি টেস্ট ক্রিকেটে ৩৫০ উইকেট নেওয়ার প্রথম বোলার হয়েছিলেন। তিনি ১৯৭১এ নিজের কেরিয়ার শুরু করেন আর ১৯৮৪ পর্যন্ত বোলিং করেছেন। এর মধ্যে তাকে বেশকয়েকবার গুরুতর চোটও লেগেছে। এই ১৩ বছরে ডেনিস লিলি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭০টি টেস্ট ম্যাচে ৩৫৫টি উইকেট নিয়েছেন। তার নামে ইনিংসে ২৩ বার পাঁচটি উইকেট আর ৭বার ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন, যার মধ্যে তার নামে ১০৩টি উইকেট রয়েছে। গতির রাজা হওয়া সত্ত্বেও ডেনিস লিলির ভারসাম্য আর নিয়ন্ত্রন এতটাই ভালো ছিল যে তিনি কখনও তার পা বোলিং ক্রিজের থেকে বেরতে দেননি।

ল্যান্স গিবস-ঃ ওয়েস্টইন্ডিজের প্রাক্তন স্পিনার ল্যান্স গিবসকে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল স্পিন বোলারদের মধ্যে গুনতি করা হয়। ল্যান্স গিবস ইংল্যান্ডের ফ্রেডি ট্রুম্যানের পর টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় বোলার ছিলেন। অন্যদিকে তিনি এই কৃতিত্ব দেখানো প্রথম স্পিনার ছিলেন। এই অফ স্পিনার ওয়েস্টইন্ডিজের হয়ে ৭৯টি টেস্ট আর ৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। যার মধ্যে তিনি মোট ৩১১টি উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু জর্জ টাউনে জন্মানো এই ক্রিকেটার কখনও নো বল করেননি আর এমনটা করা তিনি বিশ্বের একমাত্র স্পিনার

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ