ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করোনা ভাইরাসঃ সরকারের কাছে যে দাবি জানালেন বেবিচক ও বিমানবন্দরের চাকুরেরা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ জুন ২৭ ১৮:৪৭:৩৪
করোনা ভাইরাসঃ সরকারের কাছে যে দাবি জানালেন বেবিচক ও বিমানবন্দরের চাকুরেরা

তবে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ সুবিধার আওতাভুক্ত করা হয়নি। তাই এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও এ ক্ষতিপূরণ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়, 'বিশ্বব্যাপী চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে এ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দফতর, তার নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য দফতর ও বিমানবন্দরগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে অফিসিয়াল কর্মকালীন সময়েও যাত্রী সাধারণের গমনাগমনের ক্ষেত্রে সাধারণ, স্পেশাল ও চার্টার্ড বিমানে যাত্রী পরিবহন এবং কার্গো পরিবহন বিমান চলাচলে জরুরিসহ সব সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।'

'হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অনান্য বিমানবন্দরে ২৪ ঘণ্টা খোলা রেখে যাত্রী ও কার্গো সেবা প্রদান করতে হচ্ছে। বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারের প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে কার্গো বিমানের মাধ্যমে মালামাল ও অন্যান্য বিমানের মাধ্যমে যাত্রী সাধারণের আগমনের ফলে বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন।'

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে, 'প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত ২৩ এপ্রিল একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রে ডাক্তার, নার্সসহ করোনা ঝুঁকির মধ্যে যারা দায়-দায়িত্ব পালন করছে তাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা করা হয়েছে। ওই প্রাধিকারের তালিকায় প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীও অন্তর্ভুক্ত আছে।'

'বেবিচকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যেহেতু ঝুঁকি নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ও জরুরি প্রয়োজনে দাফতরিক কার্যক্রম সম্পাদন করেছেন এবং করছেন। সে কারণে তাদের সরকারঘোষিত ক্ষতিপূরণের প্রাধিকারে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।'

'এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় স্বার্থে ও জরুরি প্রয়োজনে দাফতরিক ও বিমানবন্দরের জরুরি কার্যক্রম সম্পাদনে কর্মরত বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দফতর, তার নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য দফতর ও বিমানবন্দরগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থ বিভাগের গত ২৩ এপ্রিলের পরিপত্রে বর্ণিত প্রাধিকারের তালিকায় প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরাধ করা হলো',- বলা হয় চিঠিতে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।

এদিকে গত ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং দেশের অন্যান্য কর্মীদের জন্য সরকার তাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেবে। এ ছাড়া দায়িত্ব পালনের সময় কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তাদের জন্য ৫-১০ লাখ টাকার একটি স্বাস্থ্যবীমা থাকবে। কেউ মারা গেলে স্বাস্থ্যবীমার পরিমাণ পাঁচগুণ বেশি হবে।

কিন্তু বীমার আওতায় ক্ষতিপূরণ পেতে অনেক সময় লেগে যায়, তাই সরকার বীমার পরিবর্তে সরাসরি আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেয়। গত ২৩ এপ্রিল এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ বিভাগ। পরিপত্রে বলা হয়, ‘নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ এ সংক্রান্ত সরকারঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারী দায়িত্ব পালনকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ সরাসরি আর্থিক সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।'

এ ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হলে গ্রেডভেদে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা পাবেন। সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে এর পাঁচগুণ আর্থিক সহায়তা পাবেন।

পরিপত্রে বলা হয়, ‘২০১৫ এর বেতনস্কেল অনুযায়ী ১৫-২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন পাঁচ লাখ টাকা, আর মারা গেলে পাবেন ২৫ লাখ টাকা। ১০-১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন সাড়ে সাত লাখ টাকা এবং আর মারা গেলে পাবেন সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রথম-নবম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে পাবেন ১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে পাবেন ৫০ লাখ টাকা।’

পরিপত্রে আরও বলা হয়, ;ক্ষতিপূরণের আওতায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি কর্মরত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ও সরকারঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিয়োজিত মাঠপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।'

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে