ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এই বাজেট নিয়ে যে ভবিষ্যতবানী করলেন অর্থমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ জুন ১১ ২১:২৯:৪৮
এই বাজেট নিয়ে যে ভবিষ্যতবানী করলেন অর্থমন্ত্রী

পাশাপাশি দেশের মানুষের অন্ন বস্ত্র যোগানের জন্য দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল রাখা। এই সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছেন, তাদের বিশ্বাস ও মনোবলের জায়গাটি অটুট রাখতে। কারণ তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন জীবন সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, থেমে থাকার জন্য নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় রচিত এই বাজেটের হাত ধরেই আমরা অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে পূর্বের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ভবষ্যতের কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক ভিত রচনা করবো।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইতিমধ্যে আইএমএফ ঘোষণা করেছে আগামী বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৯.৫ শতাংশ। যে অমানিশার অন্ধকার আমদের চারপাশকে ঘিরে ধরেছে, তা একদিন কেটে যাবেই। ইতিহাস সাক্ষী, বাঙ্গালী জাতি শৌর্যবীর্যের এক মূর্ত প্রতীক। জাতীয় জীবনে কালক্রমে যেসকল সংকট ও দুর্যোগ এসেছে, বাঙালি জাতি সম্মিলিত শক্তির বলেই সেসব থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে। জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা শত্রুর মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করেছি। তেমনি একইভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সবাই এক পরিবার হয়ে, একে অপরে সাহায্যে করোনাভাইরাস মোকাবিলা যুদ্ধেও আমরা জয়ী হবো, ইনশাআল্লাহ। এই ক্রান্তিকালে বিভ্রান্ত, ভীত বা আতংকিত না হয়ে আমাদের ধৈর্য এবং সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।’

২০২০ সালটি আমাদের জাতীয় জীবনে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বছর। এ বছর উদযাপিত হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেহেতু চলতি অর্থবছরেই পড়েছে জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকী। সেহেতু এ বছরটি জাতির জন্য বিশেষ একটি বছর। আমরা সবাই পুরোপুরি আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম এ বছর আমরা আমাদের অর্থনীতিতে দেশের সেরা প্রবৃদ্ধিটি জাতিকে উপহার দিবো। এক্ষেত্রে আমাদের ইন্সিত লক্ষমাত্রাটি ছিল শতকরা ৮.২ ভাগ থেকে ৮.৩ ভাগ। আমরা শুরুও করেছিলাম সুন্দর আশাদীপ্তভাবে অসাধারণ গতিতে। অর্থবছরের প্রথম ৮ মাস পর্যন্ত যখনো আমরা করোনায় বেশী মাত্রায় আক্রান্ত হয়নি, আমরা অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। পৃথিবীর প্রখ্যাত সকল থিংকট্যাংক ও গণমাধ্যমসমূহ আমাদের প্রশংসায় ছিল পঞ্চমুখ। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বছরের প্রথম ৮ মাসের হিসাবে আমাদের পৃবৃদ্ধির হিসাব কষেছিলো ৭.৮ ভাগ। কিন্তু দুঃখের বিষয় করোনার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতির হিসাব-নিকাশকে সম্পূর্ণ ওলটপালট করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতে ২০২০ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩.০ শতাংশ সংকুচিত হবে এবং বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১.৮-২.৮ শতাংশ হবে মর্মে পূর্বাভাস দিয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্যি সংস্থার মতে ২০২০ সালে বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যি ১৩-২০ শতাংশ হ্রাস পাবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে বিশ্বব্যাপী ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ কর্মীর পূর্ণকালীন চাকরি হ্রাস পাবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব শুরুর সাথে সাথেই আমরা এ সংকট মোকাবিলায় নানাবিধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব উত্তরণে আমরা একটি সামগ্রিক কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি যার মধ্যে কিছু কাজ আমরা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করেছি, কিছু স্বল্পমেয়াদে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি ও এবং কিছু কাজ দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়ন করবো।

আমাদের এ কর্মপন্থার চারটি প্রধান কৌশলগত দিক রয়েছে। প্রথম কৌশলটি হল সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে কর্মসৃজনকে প্রাধান্য দেয়া এবং বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা। গত এক দশকের সুশৃঙ্খল মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতি বাস্তবায়নের ফলে আমাদের ঋণের স্থিতি-জিডিপি’র অনুপাত অত্যন্ত কম (৩৪ শতাংশ) হওয়ায় প্রাদূর্ভাবজনিত কারণে সরকারি ব্যয় বড় আকারে বাড়ালেও তা সামষ্টিক অর্থনীতির উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। আমাদের দ্বিতীয় কৌশলটি হল ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে কতিপয় ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করা যাতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত হয় এবং দেশে-বিদেশে উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তৃতীয় কৌশলটি হল হতদরিদ্র, কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা। চতুর্থ ও সবশেষ কৌশলটি হল বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা। তবে, এ কৌশলটি আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করছি যাতে মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে