ঢাকা, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রতি মুহূর্তেই রূপ বদলে ভয়ংকার হচ্ছে করোনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ মে ১২ ১২:২৩:০৬
প্রতি মুহূর্তেই রূপ বদলে ভয়ংকার হচ্ছে করোনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, জ্বর সর্দি কিংবা শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেলেই করোনায় মৃত্যু- এমন ধারণা সঠিক নয়। তাদের দাবি, এসব উপসর্গ নিয়ে এমনিতেই প্রতিবছর প্রায় আড়াই হাজার লোক মারা যান। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা প্রতি মুহূর্তেই রূপ পাল্টাচ্ছে। তাই এসব উপসর্গ থাকলে দ্রুত শ্বাসকষ্টের চিকিৎসাই একমাত্র সমাধান।

পরীক্ষার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কোভিড নাইনটিনে শনাক্তের সংখ্যাও। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকা। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন শনাক্তের তালিকার বাইরেও অনেকেই মারা যাচ্ছেন। যাদের অনেকের রয়েছে হালকা উপসর্গ, আবার অনেকের মৃত্যুর পর পজিটিভ বলে শনাক্ত হচ্ছেন। করোনায় মৃতদের দাফনের কাজে যারা যুক্ত তারা বলছেন, পরীক্ষায় পজেটিভ হওয়াদের মধ্যে মৃতের সংখ্যা, উপসর্গ নিয়ে মৃতের অর্ধেকেরও কম। নাম না প্রকাশের শর্তে ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিট থেকে জানানো হয়েছে, কিছু রোগী চিকিৎসা শুরুর আগেই মারা যাচ্ছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, এখন পর্যন্ত করোনা ইউনিটে মোট রোগীর আসছিল ৩২৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫২ জন। আর এদের মধ্যে পজেটিভ পাওয়া গিয়েছিল ৯ জনের। চিকিৎসা শুরুর আগেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন।

আল-মারকাজুল ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামজা শহিদুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক দাফন করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় একশত এর উপর করোনা পজেটিভ ছিল। আর বাসায় যারা মারা গেছে তাদের করোনা নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনও রিপোর্ট আসেনি। এছাড়া বাকি যারা মৃত্যু বরণ করেছে এর মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন রোগ নিয়ে মারা গেছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৯ জনকে দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন ছিলেন করোনা পজেটিভ। আর বাকিরা মারা গেছে বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে। তাছাড়া অনেকেই আছে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩/৪ দিনের মধ্যে মারা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, শ্বাসকষ্ট কিংবা এসব উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু করোনার সুস্পষ্ট লক্ষণ। যেখানে হাসপাতালগুলোরও কিছু করার থাকে না।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদউয়ানউর রহমান বলেন, বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট আছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রম লক্ষণ আছে যেমন এর মধ্যে কিছুই নাও থাকতে পারে। এর জন্য এই ভাইরাসকে বলা হয় নটরিয়াস ভাইরাস। এমন কোনো লক্ষণ নেই যে সে করতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় জ্বর, কাশি না হয়েও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আর সেটার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, অক্সিজেন কমে যাচ্ছে আর মানুষ মারা যাচ্ছে। আমার মনে হয় সেই জায়গায় চিকিৎসার দরকার আছে। যাদের এই রকম উপসর্গ দেখা যাবে অবশ্যই তাদের হাসপাতালে আসতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, করোনার মতো একই লক্ষণ নিয়ে আগে থেকেই দেশে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ মারা যেতেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সহকারী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, টিবির সিমটমওতো আপনার কাশি, বুকের শ্বাসকষ্ট এমনকি হার্টের অসুখ হলেও এই সমস্যা শ্বাসকষ্ট হয়। কাজেই এগুলোকে তো কোভিটের উপসর্গ বলতে পারি না। একই রকম উপসর্গ অন্য অসুখেরও আছে। আর বাংলাদেশে কী আগে মানুষ মারা যায়নি। অসুখে প্রতিদিনই তো আড়াই হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার হালকা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে অবহেলা না করে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সর্বত্র পরীক্ষার বুথ বসানোর ব্যবস্থা করা উচিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। যা করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনার সঠিক চিত্র উঠে আসবে বলে মনে করেন তারা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে